অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪

আমাদের মধ্যে যাদের জমি আছে তাদের অবশ্যই খাজনা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু, অনেকে আছেন যারা জানেন না অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম। 

যার ফলে তারা জমির খাজনা দিতে গিয়ে নানা ভোগান্তির সম্মুখীন শিকার হচ্ছে। বর্তমান এই ডিজিটাল বাংলাদেশে এখনো অনেক জমির মালিকগণ মনে করেন খাজনা দেওয়ার জন্য ভূমি অফিসে যেতে হবে।

কিন্তু, বর্তমানে সবকিছু ডিজিটাল হয়ে যাওয়ার কারণে আপনি নিজের ঘরে বসে জমির খাজনা পরিশোধ করতে পারবেন। 

অর্থ্যাৎ আপনাকে আর কষ্ট করে পূর্বের মতো সশরীরে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যেতে হবে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারবেন। 

মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে জমির খাজনার টাকা পেমেন্ট করতে পারবেন এবং খাজনা পরিশোধ হয়ে গেলে রশিদ নেওয়ার জন্য ভূমি অফিসে যেতে হবে না। রশিদ অনলাইন থেকে গ্রহণ করতে পারবেন।

এর আগের আর্টিকেলে আমি বলেছে জমির মালিকানা যাচাই করার নিয়ম বা জমির রেকর্ড যাচাই করার নিয়ম সম্পর্কে। 

তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি ঘরে বসে অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম বা উপায় সম্পর্কে।

ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা দেওয়ার জন্য আপনার কিছু ডকুমেন্ট বা কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। 

নিচে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো উল্লেখ করা হয়েছে, 

  • একটি সচল মোবাইল নম্বর। 
  • ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র। 
  • খতিয়ান এর ফটোকপি। 
  • অনলাইন পেমেন্ট মেথড (বিকাশ, নগদ, রকেট)।

উপরে উল্লেখ করা ডকুমেন্ট গুলো যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে খুব সহজে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে জমির খাজনা দিতে পারবেন। 

অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম ২০২৪

জমির খাজনা দেওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে নাগরিক নিবন্ধন করতে হবে। এজন্য ভূমি উন্নয়ন কর এই আইকনে ক্লিক করতে হবে।

অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর অপশনে ক্লিক করার পরে নাগরিক নিবন্ধন করতে পারবেন। নাগরিক নিবন্ধন করার জন্য আপনার মোবাইল নম্বর এবং জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন হবে।

নাগরিক নিবন্ধন ছাড়াও আপনি চাইলে সরাসরি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার জমির খাজনা পরিশোধ করতে পারবেন।

নাগরিক নিবন্ধন ছাড়া কিভাবে অনলাইনে সরাসরি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে খাজনা পরিশোধ করবেন সেই সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

অনলাইনের মাধ্যমে জমির খাজনা দেওয়ার জন্য প্রথমে যেতে হবে ভূমি মন্ত্রণালয় এর land.gov.bd এই ওয়েবসাইটে। খাজনা দেওয়ার জন্য ভূমি উন্নয়ন কর অপশনে ক্লিক করুন। 

সরাসরি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে খাজনা পরিশোধ করার জন্য উপরের বামপাশে পেমেন্ট করুন অপশনে ক্লিক করুন।

এবার আপনাকে অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করার জন্য বিভাগ, জেলা, উপজেলা, মৌজা, হোল্ডিং নং সিলেক্ট করে অনুসন্ধান করুন অপশনে ক্লিক করুন।

জমির খতিয়ান থেকে হোল্ডিং নং বের করে নিতে পারবেন। তাছাড়া হোল্ডিং নং বের করার জন্য ভূমি অফিসের সহায়তা নিতে পারেন। অথবা আপনি যদি পূর্বে খাজনা পরিশোধ করে থাকেন তাহলে সেই রশিদে হোল্ডিং নং লেখা থাকে।

এখানে জমি মালিকের নাম, হোল্ডিং নং এবং সর্বশেষ কর পরিশোধের সাল দেখতে পাবেন। পরবর্তী পদক্ষেপে আপনাকে এন.আই.ডি যাচাই এই অপশনে ক্লিক করতে হবে। 

এবার খাজনা প্রদানকারীর তথ্য যাচাই করার জন্য উক্ত ব্যাক্তির মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর এবং জন্ম তারিখ লিখে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করতে হবে।

উক্ত খাজনা পরিশোধকারীর ব্যাক্তির নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ এবং ছবি দেখতে পাবেন। এবার পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।

পরবর্তী পেজে জমি সংক্রান্ত রেকর্ড বা হোল্ডিং ও ভূমি উন্নয়ন করের বিস্তারিত তথ্য দেখতে পারবেন। কত বছর খাজনা / কর দেওয়া হয়নি, সর্বমোট কত টাকা দিতে হবে, জমির মালিকের নাম, খতিয়ান নং, দাগ নং এবং জমির পরিমাণ (শতক) দেখতে পাবেন।

এছাড়া জমির আরো তথ্য জানতে চাইলে বিস্তারিত অপশনে ক্লিক করুন। খাজনা দেওয়ার জন্য অনলাইন পেমেন্ট অপশনে ক্লিক করুন।

ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধ করার জন্য সকল মালিক অপশনে থেকে আপনি যে মালিকের কর বা খাজনা পরিশোধ করতে চান তার নাম সিলেক্ট করুন।

অনলাইনে পেমেন্ট করার জন্য বিকাশ, উপায়, একপে, নগদ, রকেট এবং নেক্সাস অপশন থেকে আপনার সুবিধা অনুযায়ী সিলেক্ট করে ই-পেমেন্ট করুন এই অপশনে ক্লিক করুন।

এবার আপনাকে পেমেন্ট অপশনে নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে আপনার বিকাশ নাম্বার লিখে CONFIRM অপশনে ক্লিক করুন।

বিকাশ ভেরিফাই করার জন্য আপনার বিকাশ নাম্বারে ৬ ডিজিটের কোড পাঠানো হবে উক্ত কোডটি লিখুন এবং CONFIRM অপশনে ক্লিক করে পাসওয়ার্ড (PIN) দিয়ে পেমেন্ট করুন।

আপনার জমির খাজনা পরিশোধ করা হয়ে গেছে। এবার আপনাকে খাজনা পরিশোধের সাময়িক একটি রশিদ দেওয়া হবে। উক্ত রশিদ অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে নিবেন।

মূল রশিদ গ্রহণ করার জন্য আপনাকে ৭২ ঘন্টা বা ৩ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

জমি সংক্রান্ত আরো তথ্য পড়ুন

শেষ কথা 

আজকে আমরা জানলাম অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার নিয়ম বা জমির কর পরিশোধ করার নিয়ম সম্পর্কে। 

এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোনো বিষয় প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দিবো ইনশাআল্লাহ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *