বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম ২০২৪

আপনার পরিবারের কোনো ব্যাক্তির বয়স যদি ৬৫ বছরের বেশি হয় এবং কাজ করতে অক্ষম তাহলে উক্ত ব্যাক্তি বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করতে পারবেন।

আপনি চাই খুব সহজে ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে পারবেন। আবেদন যাচাই বাছাইয়ের পর আপনার প্রদান করা মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বারে ভাতার টাকা গ্রহণ করতে পারবেন।

এখান থেকে কয়েক বছর আগে বয়স্ক ভাতার টাকা নেওয়ার জন্য ব্যাংকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো কিন্তু বর্তমান সরকার বয়স্ক ভাতার টাকা G2P পদ্ধতিতে পরিশোধ করার জন্য অনলাইন আবেদন যাচাই বাছাইয়ের পর সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বারে প্রদান করার ব্যবস্থা করেছে।

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম, আবেদন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে এবং আবেদনকারীর যোগ্যতা সম্পর্কে।

বিজ্ঞপ্তি: আপনারা যারা বয়স্ক ভাতা পান ইতিমধ্যে তাদের বয়স্ক ভাতার টাকা মোবাইলে প্রদান করা হয়েছে। তাই আজই চেক করুন।

বয়স্ক ভাতা কি

বয়স্ক ভাতা বাংলাদেশ সরকার কতৃক একটা অনুদান কর্মসূচি, যার মাধ্যমে ৬৫ বছরের বয়স্ক পুরুষ এবং ৬২ বছরের বয়স্ক মহিলা দুস্থ, কর্মহীণ এবং স্বল্প আয়ের ব্যাক্তিদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।

সরকার কতৃক এই আর্থিক সহযোগিতা পাওয়ার জন্য আপনার কিছু যোগ্যতা ও শর্ত পূরণ করতে হবে এবং অনলাইন আবেদন করার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে বয়স্ক ভাতার জন্য নির্বাচিত হলে তাকে ভাতা প্রদান করা হয়।

বয়স্ক ভাতা কত বছর বয়সে দেওয়া হয়

বয়স্ক ভাতার ক্ষেত্রে পুরুষ এবং মহিলা উভয় আবেদন করতে পারবে। তবে, পুরুষের ৬৫ বছর বয়স এবং মহিলাদের ৬২ বছর বয়স হতে হবে। তাছাড়া, দুইজনের বছরের আয় ১০ হাজার টাকার কম হতে হবে।

বাংলাদেশ বয়স্ক ভাতা কত সালে চালু হয়

বাংলাদেশে প্রথম বয়স্ক ভাতা চালু হয় ১৯৯৮ সাল থেকে। দেশে ৬৫ বছরের কর্মহীন ও নিন্ম আয়ের ব্যাক্তিদের নিরাপত্তা ও আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য ১৯৯৭-১৯৯৮ অর্থ বছরে প্রথম বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি চালু করা হয়।

প্রথমে প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের প্রত্যেক ওয়ার্ডে ৫ জন পুরুষ এবং ৫ জন মহিলা সহ মোট ১০ জনকে এর কর্মসূচির আওতায় আনা হয় এবং তাদেরকে প্রত্যেক মাসে ১০০ টাকা প্রদান করা হয়।

পরবর্তী সময়ে বয়স্ক ভাতাভোগীদের পরিমান অনেক অংশে বৃদ্ধি করা হয়।

বাংলাদেশ বয়স্ক ভাতা কত টাকা ২০২৪ সালে

১৯৯৭-১৯৯৮ অর্থ বছরে প্রথম বয়স্ক ভাতা কর্মসূচি চালু হওয়ার পরে মাসিক ভাতার পরিমান ছিলো ১০০ টাকা। তবে, ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বর্তমান সময় বয়স্ক ভাতার পরিমান ৫০০ টাকা।

অর্থবছর মাসিক বয়স্ক ভাতার পরিমান
১৯৯৭-১৯৯৮ ১০০ টাকা
২০০৯-২০১০ ২৫০ টাকা
২০১০-২০১১ ৩০০ টাকা
২০১৬-২০১৭ ৫০০ টাকা
বয়স্ক ভাতা কত টাকা

বয়স্ক ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা

বাংলাদেশ সরকার কতৃক বয়স্ক ভাতা পেতে হলে নিচের যোহ্যতা গুলো থাকতে হবে।

  • আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। 
  • সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থায়ী নাগরিক হতে হবে এবং ভোটার আইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন সনদ থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী পুরুষের বয়স ৬৫ বছর এবং মহিলার বয়স ৬২ বছরের বেশি হতে হবে। 
  • আবেদনকারীর বার্ষিক আয় ১০ হাজার টাকার কম হতে হবে।

বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তির অযোগ্য

  • ভিজিডি কার্ড থাকলে।
  • সরকারি কর্মচারী পেনশন সুবিধা ভোগ করলে।
  • অন্য কোনো সরকারি ভাতা প্রাপ্ত হলে।
  • কোনো বেসরকারি সংস্থা থেকে ভাতা প্রাপ্ত হলে।

বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন ২০২৪

অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার জন্য mis.bhata.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বয়স্ক ভাতা আবেদন ফরম পূর্ণ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা পৌরসভার কাউন্সিলরের কাছ থেকে সাক্ষর নিন। এরপর উপজেলা সমাজসেবা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দিন।

বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করার নিয়ম (Boyosko vata online application)

আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনের মাধ্যমে বয়স্ক ভাতার আবেদন করার জন্য নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করুন।

  • প্রথমে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে বয়স্ক ভাতা আবেদন এই অপশন এ যান।
  • নতুন আবেদনকারী বয়স্ক ভাতা সিলেক্ট করে জাতীয় পরিচয় নম্বর এবং জন্ম তারিখ দিয়ে যাচাই করুন।
  • আপনার ছবিসহ স্বয়ংক্রিয় ভাবে কিছু তথ্য পূরণ হয়ে যাবে এবং বাকি তথ্য গুলো আপনাকে পূরণ করে সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন।
  • আবেদন সফল হলে আবেদন ফরমটি প্রিন্ট করে সংগ্রহ করুন।
  • ফরমের নিদিষ্ট অংশে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান / পৌরসভার কাউন্সিলের স্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা সমাজ সেবা অফিসে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জমা দিবেন।

বিঃদ্রিঃ মাঝে মাঝে সিস্টেম আপডেটের কারণে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আবেদন করার পেজটি বন্ধ থাকতে পারে। বর্তমানে তাদের সিস্টেম উন্নয়নের কাজ চলছে।

বয়স্ক ভাতা আবেদন যাচাই বাছাই

বয়স্ক ভাতার আবেদন যাচাই বাছাই করার জন্য স্থানীয় একটি কমিটি থাকে। তাদের মাধ্যমে আবেদনকারীদের যাচাই বাছাই করা হয়। 

আবেদনকারীদের যাচাই বাছাই করার জন্য নিচের বিষয় গুলো বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

  • আবেদনকারীকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে।
  • সর্বচ্চ বয়স্কদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। 
  • নিঃসন্তান, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত এবং পরিবার থেকে বিচ্ছিন্নদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। 
  • ভূমিহীন ব্যাক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। 
  • শারিরীকভাবে অক্ষম ব্যাক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
  • দরিদ্র ও নিঃস্বদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।

বয়স্ক ভাতা মোবাইল ব্যাংকিং

করোনাভাইরাসের সময় থেকে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন অনুদান, ভাতা, ত্রান ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং নগদ, বিকাশ, রকেট ইত্যাদির মাধ্যমে প্রদান করে আসতেছে।

এতে নাগরিকদের দুর্ভোগ ও ঝামেলা কমছে এবং সেই সাথে দালাল ও অসৎ ব্যাক্তিদের দূর্নীতির হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।

আবেদনকারী ব্যাক্তির আবেদন যাচাই বাছাই করার পরে নির্বাচিত হলে ভাতার টাকা গ্রহণ করার জন্য মোবাইল ব্যাংকিং নাম্বার এর প্রয়োজন হবে।

ভাতাভোগীর নিজস্ব আইডি কার্ড দিয়ে সমাজসেবা অফিসের নিদের্শনাতম মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট বিকাশ, নগদ, রকেট খুলতে হবে।

শেষ কথা

আজকে আমরা জানলাম কিভাবে বয়স্ক ভাতা অনলাইন আবেদন করতে হয়, আবেদন করতে কি কি লাগে এবং তাদের যোগ্যতা সম্পর্কে। এই আর্টিকেলের বিষয় কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করে লিখে জানাবেন।

ভাতা ও অনুদান সম্পর্কে আরো তথ্য পড়ুন

Similar Posts

2 Comments

  1. আমি এক জন প্রতিবনদি আমাকে সাহাজো করুন আমার বিকাশ নাম্বার (01327026374)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *