ভ্যাট কি? ভ্যাট ও ট্যাক্স এর মধ্যে পার্থক্য
ভ্যাট কি এই বিষয় আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে যথেষ্ট ধারণা নেই। তাই আজকের আর্টিকেলে Vat কি, ভ্যাট কত প্রকার, ভ্যাট কি ধরনের কর এবং ভ্যাট ও ট্যাক্স এর মধ্যে পার্থক্য কি এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
ভ্যাট হলো একটি কর। বাংলাদেশ সরকার নানা ধরনের কর আহরণ করে থাকে জনগণের কাছ থেকে। এই করের মধ্যে ভ্যাট ও একটি কর।
যাকে বলা হয় মূল্য সংযোজন কর। ভ্যাটকে আবার ভোগ কর বলা হয়। কারণ ভ্যাট আহরণ করা হয় পণ্য ও সেবার উপর।
আপনি কোনো যখন পণ্য এবং সেবা ক্রয় করবেন তখন আপনার কাছ থেকে সরকার ভ্যাট আহরণ করবে।
ভ্যাট কি (Vat ki)
ভ্যাট ইংরেজি শব্দ VAT (Value Added Tex) যার বাংলা অর্থ মূল্য সংযোজন কর। যে সকল কর গুলো মূল্যের সাথে যোগ করে পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয় তাকে ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর বলে।
ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর একটি পরোক্ষ কর। যা ভোক্তা বা ক্রোতাদের কাছ থেকে আহরণ করা হয়। নিদিষ্ট একটি পণ্যের দামের পর অতিরিক্ত যে টাকা সংযোজন করা হয় তাকে ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন বলে।
পণ্য বা সেবার বিভিন্ন ধাপে যে পরিমাণ মূল্য সংযোজন করা হয় সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা তার উপর কর দিয়ে থাকে।
বাংলাদেশে প্রথম ভ্যাট পদ্ধতি চালু করা হয় ১৯৯১ সালের ১ লা জুলাই। যদিও বাংলাদেশে এই ব্যবস্থা দেরিতে শুরু হলেও ভ্যাট নামের কর ব্যবস্থা অনেক পুরনো।প্রথম ইউরোপে ১৯৬০ দশকে ভ্যাট নামের কর ব্যবস্থা শুরু হয়।
উদাহরণ, একটি পণ্যের মূল্য ১০০০ টাকা। এখন আপনাকে ঔ পণ্য নিদিষ্ট পরিমাণ ভ্যাট শতাংশ হারে প্রদান করতে হবে। যদি পণ্যের উপর ১৫% ভ্যাট ধরা হয় তাহলে আপনাকে মোট দিতে হবে ১১৫০ টাকা।
মনে রাখবেন এতটাই হলো মূল্য সংযোজন কর বা মূসক। ভ্যাট, মূল্য সংযোজন কর এবং মূসক একই শব্দ।
ভ্যাট কাকে বলে
যে কর পণ্যের সাথে যুক্ত করে পণ্যের দাম ঠিক করা হয় তাকে তাকে ভ্যাট বলে। সব পণ্যের সাথে এটা যুক্ত করা থাকে, যে কারণে আমরা অনুভব করতে পারি না।
তবে, আমরা সবাই নিয়মিত পণ্য কেনার সাথে সরকারকে এই ভ্যাট প্রদান করে চলেছি। আমরা প্রত্যেকটি প্রণ্য ক্রয় করার সময় সরকারকে যে ভ্যাট প্রদান করি সেটা অনেকের অজানা।
ভ্যাট কত প্রকার ও কি কি
ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর দুই প্রকার। যথা,
- প্রত্যক্ষ ভ্যাট
- প্ররোক্ষ ভ্যাট
ভ্যাট কখন দিতে হয়
সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ভ্যাট প্রদান করতে হয়। তবে এটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে আপনার ব্যবসার বাৎসরিক টার্নওভারের উপর।
আপনার ব্যবসার বাৎসরিক টার্নওভার যদি ৩০ লাখ টাকার বেশি হয় তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভ্যাট প্রদান করতে হবে। আর যদি ৩০ লাখ টাকার কম হয় তাহলে ভ্যাট প্রদান করতে হবে না।
ব্যবসার টার্ণওভারের উপর নির্ভর করে আপনার ভ্যাটের % দিতে হবে। ব্যবসা যদি ৩০ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৮০ লাখ টাকার মধ্যে হয় তাহলে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৩% হারে ভ্যাট প্রদান করতে হবে।
ভ্যাট নির্ণয়ের সূত্র
ক্রয় বিক্রয় মূল্যের সাথে ভ্যাট অন্তর্ভুক্ত নেই। লেনদেন হতে পারে ২০০০০ টাকার পণ্য ক্রয়। এক্ষেত্রে ১৫% ভ্যাট দিতে হবে। ভ্যাট নির্ণয়ের সূত্র হলো-
ক্রয় / বিক্রয় মূল্য x ১৫% ÷ ১০০% অর্থাৎ ২০০০০ = ৩০০০ টাকা।
ভ্যাট ও ট্যাক্স এর মধ্যে পার্থক্য
কোনো চাকরিজীবী, প্রতিষ্ঠান বা একজন ব্যবসায়ী যখন এক বছরে যে পরিমাণ আয় করে তার উপর সরকারকে যে নিদিষ্ট পরিমাণ কর দিতে হয় তাকে ট্যাক্স (Tax) বলে।
সরকারি আইন অনুযায়ী নিদিষ্ট আয়ের উপর যে কর প্রদান করা হয় তাকে আয়কর ট্যাক্স বা ইনকাম ট্যাক্স বলে।
আর একটি পণ্য বা সেবার উপর অতিরিক্ত যে মূল্য সংযোজন করা হয় তাকে ভ্যাট বলে। বাংলাদেশে উৎপাদন, আমদানিকৃত বা সরবরাহকৃত সকল পণ্য ও সেবার উপর ভ্যাট প্রযোজ্য।
আশাকরি সহজে ভ্যাট ও ট্যাক্স এর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারছেন।
ভ্যাট কি ধরনের কর
ভ্যাট (Vat) এক প্রকার পরোক্ষ কর। প্রত্যেক পণ্য ও সেবার উপর এই কর প্রযোজ্য। পণ্য বা সেবা ক্রয়ের সময় মূল্যের সাথে বিক্রেতার কাছ থেকে ভ্যাট বাবদ অর্থ নেওয়া হয়।
ভ্যাটের টাকা পণ্য বা সেবার সাথে সংযোজন করা থাকে যে কারণে আমাদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা বুঝতে পারেন না। আপনার আমার দেওয়া ভ্যাট সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়।
শেষ কথা
আজকে আমরা জানলাম ভ্যাট কি, ভ্যাট কাকে বলে, ভ্যাট কত প্রকার ও কি কি, কখন ভ্যাট প্রদান করতে হবে এবং ভ্যাট ও ট্যাক্স এর মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে।
এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোনো বিষয় প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দিবো।
আর নিয়মিত নতুন নতুন কনটেন্ট পেতে ভিজিট করুন আমাদের ইসেবাবিডি এই ওয়েবসাইট।
ব্যাট এবং ট্যাগ সম্পর্কে আলোচনাটি খুব ভালো লাগলো
Thanks
আমার টিন আগেই করা আছে। এখন ব্যবসার প্রয়োজনে ভ্যাট করতে হবে, সেক্ষেত্রে টিন কি চালু থাকবে নাকি বন্ধ করতে হবে? আমি এখন আর চাকুরী করছি না।
এই বিষয় সঠিক পরামর্শ পেতে আমাদের ব্লগে “টিন থাকলে কি কর দিতে হবে” এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ন পড়ুন। ধন্যবাদ