রেমিট্যান্স কি? রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম

রেমিট্যান্স কি, রেমিট্যান্স কাকে বলে, রেমিট্যান্স অর্থ কি, রেমিট্যান্স যোদ্ধা কারা এবং বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম জানুন।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ গুলোতে রেমিট্যান্স এর অর্থনৈতিক রেমিট্যান্স গুরুত্ব অপারেশীম। কারণ, রেমিট্যান্স থেকে সরকারের প্রত্যেক মাসে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় হয়।

সরকার বিদেশ থেকে ঋণ না নিয়ে প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ বা রেমিট্যান্স দিয়ে দেশের বিভিন্ন  উন্নয়ন করতে পারেন।

আমাদের দেশের মানুষ উন্নত জীবনযাপন এবং বেশি টাকা আয় করার জন্য নিজের দেশ ছেড়ে বাহিরের অন্যান্য দেশে চলে যাচ্ছে। যার ফলে প্রত্যেক মাসে দেশে প্রচুর পরিমান রেমিট্যান্স আয় হচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে যত বেশি পরিমান মানুষ বিদেশে কাজ করার উদ্দেশ্যে যাবে ততই বেশি পরিমাণে রেমিট্যান্স দেশে আসবে।

রেমিট্যান্স কি (What is remittance)

বিদেশে কর্মরত কোন প্রবাসী কর্মী তার আয় করা অর্থ যখন নিজের দেশের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে প্রেরণ করে সেই অর্থ হলো রেমিট্যান্স।

সহজ ভাষায় বলতে গেলে প্রবাসে কাজ করা কোনো ব্যাক্তি যখন নিদের দেশে টাকা পাঠায় তখন সেই টাকা বা অর্থকে রেমিট্যান্স বলে।

উদাহরণঃ মনে করুন আপনি বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা গেছেন কাজের উদ্দেশ্যে। আমেরিকায় যখন আপনি কাজ করে অর্থ উপার্জন করবেন এবং সেই অর্থ দেশের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পাঠান, এই অর্থকে রেমিট্যান্স বলে।

আবার অনেক বাংলাদেশী ভাইরা বিদেশে ব্যবসা করেন এবং ব্যবসার মুনাফা যখন দেশে পাঠান তখন এটাকেও রেমিট্যান্স বলা হয়।

রেমিট্যান্স কাকে বলে?

বিদেশে কাজ করা কোন নাগরিক যখন তার আয় করা অর্থ দেশের আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠান তখন সেই অর্থকে রেমিট্যান্স বলে।

রেমিট্যান্স অর্থ কি?

রেমিট্যান্স শব্দটি রেমিট শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো ফেরত পাঠানো। তাহলে রেমিট্যান্স শব্দের অর্থ হলো প্রবাসে কর্মরত ব্যাক্তি তার স্বজনদের কাছে অর্থ পাঠানো।

রেমিট্যান্স যোদ্ধা কারা

যারা বাংলাদেশী নাগরিক কিন্তু কাজ বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিদেশে কর্ম করছেন এবং প্রত্যেক মাসে দেশে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে আয় করা অর্থ পাঠাচ্ছেন তাদেরকে বলা হয় বাংলাদেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধা।

তারা উন্নত জীবনযাপন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং নিজের পরিবারকে  অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য প্রবাসে পাড়ি জমান।

বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম

প্রবাসী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা তাদের আয় করা অর্থ বা রেমিট্যান্স খুব সহজে দেশে পাঠাতে পারবেন। এর আগের আর্টিকেলে আমি বলেছি কিভাবে বিদেশ থেকে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাবেন।

বিদেশ থেকে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম জানতে নিচের আর্টিকেলটি পড়ুন –

বিদেশ থেকে ব্যাংকে টাকা পাঠানোর নিয়ম (সকল ব্যাংকে)

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে কোন কোন দেশ থেকে?

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে ১০টি দেশ থেকে। এই দেশ গুলো হলো সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ওমান, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ইতালি।

গতবছর ২০২২ সালে এপ্রিল মাসে দেশে প্রবাসীদের দেশে রেমিট্যান্সের টাকা এসেছে ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ধীরে ধীরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পাচ্ছে।

রেমিট্যান্স বোনাস

কোনো প্রবাসী ভাই যদি তার আয় করা অর্থ বৈধ ভাবে দেশে পাঠায় তাহলে ২.৫% থেকে ৩% রেমিট্যান্স বোনাস পাবেন।

বিদেশ থেকে ব্যাংকে রেমিট্যান্স পাঠালে ২% থেকে ৩% রেমিট্যান্স বোনাস বা সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হবে। অধিকাংশ ব্যাংক গুলো ২% বোনাস কিন্তু কিছু কিছু ব্যাংক ৩% বোনাস দেয়। যেমন ডাচ বাংলা ব্যাংক।

আবার অনেক প্রবাসী ভাইরা আছেন যারা বিকাশে টাকা পাঠাতে পছন্দ করেন। বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠালে ২.৫% বোনাস পাবেন। বিস্তারিত জানতে পড়ুন – বিদেশ থেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর নিয়ম সাথে ২.৫% বোনাস

রেমিট্যান্স এর সুবিধা

  • রেমিট্যান্স দের মাথাপিছু আয় ও জিডিপির মান উন্নত করে।
  • দেশের প্রচর সংখ্যাক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান ও পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভুমিকা পালন করে।
  • রেমিট্যান্স একটি উন্নত জীবনযাপন সুযোগ দেয় এবং পরিবারের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
  • প্রবাসীদের দেশে পাঠানো রেমিট্যান্স বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকার বিনিয়োগ করে দেশের উন্নয়ন করতে পারে।
  • রেমিট্যান্স নিজের ও দেশের মানব উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

শেষ কথা

আজকে আমরা জানলাম রেমিট্যান্স কি বা কাকে বলে এবং বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর নিয়ম সম্পর্কে। এই বিষয় কোনো প্রশ্ন জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।

FAQ (প্রশ্ন উত্তর)

রেমিট্যান্স যোদ্ধা কাকে বলে?

যারা বাংলাদেশী নাগরিক বিদেশে কর্মরত আছেন এবং দেশে পরিবার পরিজনদের নিকট টাকা পাঠাচ্ছেন তাদেরকে রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলে। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা এদেশ গর্ব।

Similar Posts

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *